সন্তানেরা তাদের বাবা মায়ের অত্যন্ত প্রিয় জিনিস বা শখের জিনিস তাঁদের মৃত্যুর পর বিক্রি করে দেয় হয় লোভের বশে কিংবা একাধিক ভাইবোন থাকলে কে সেই জিনিসটা রাখবে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে যাতে সম্পর্কের হানি না ঘটে বা সেই জিনিসের রক্ষণাবেক্ষণ আদৌ সম্ভব হবে কিনা সেটা ভেবে বা কিছু অর্থাগম হবে এই আশায়। এখানে ভাবাবেগ কোন কাজ করেনা এবং কারো সেটা থাকলে তাকে নানাভাবে প্রকাশ করতে দেওয়া হয়না। অথচ জিনিসটা হস্তান্তরিত হবার পর ক্রেতা যখন মূল জিনিসটা অবিকৃত রেখে তার সৌন্দর্য বাড়ায়, তখন তাদের বিবেক জাগ্রত হয় বা ভাবাবেগ বেরিয়ে আসে এবং চোখের জল ফেলে। জিনিসটাকে ধরে রাখা যে খুব কঠিন ছিল তা নয় কিন্তু যে কোন কারণেই হোক তাকে তো ধরে রাখার চেষ্টা করাই হয়নি বা যে ধরে রাখার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিল তাকেও যেন তেন প্রকারেণ তাকে দমিয়ে রাখা হয়েছিল। আমরা কোন জিনিসের মূল্য তার জীবদ্দশায় ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা, তার মূল্যায়ন হয় সেটা হাতছাড়া হবার পর। এটা কি বিবেকের দংশন না আর কিছু?
Wednesday, 9 July 2025
স্মৃতি ও বিবেক
স্মৃতির সঙ্গে বিবেকের কোন সম্পর্ক আছে কিনা ঠিক জানা নেই। কিন্তু একটা কথা ঠিক যে বিবেকের দংশন হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিকে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে টেনে বার করে আনে। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই হৃদয় বলে কিছু জিনিস থাকে কিন্তু কোন কোন সময় তা বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে চাপা পড়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেনা কিন্তু আগুন যেমন চিরকাল ছাই চাপা পড়ে থাকেনা ঠিক সেই রকমই হৃদয়ের বাহ্যিক প্রকাশ হবেই। বিবেক তাকে ঠিক টেনে আনবেই। দুর্বাসা মুনির আশীর্বাদে কুন্তী সূর্যদেবের আবাহন করতেই ঘটে গেল বিপত্তি, জন্ম হলো কর্ণের এবং কুন্তী তাকে ঝুড়িতে শুইয়ে দিয়ে জলে ভাসিয়ে দিয়ে তখনকার মতো নিজের লজ্জ্বা বাঁচালেন বটে কিন্তু বিবেকের তাগিদেই হোক আর কুরুপাণ্ডবের যুদ্ধে নিজের ই এক সন্তান অন্য পাঁচ সন্তানের সঙ্গে যুদ্ধ যাতে না করে সেই কারণেই হোক, যুদ্ধের আগের দিন সন্ধ্যা বেলায় কর্ণের কাছে নিজের পরিচয় দিতে গেলেন , কিছুটা কি আত্মগ্লানি ঘোচাতে নয়? কবিগুরুর কলমে ঝরেছে, " লোভে যদি কারে দিয়ে থাকি দুখ, ভয়ে হয়ে থাকি কর্ম বিমুখ, পরের পীড়ায় পেয়ে থাকি সুখ মোহের ভরে, আমার বিচার তুমি করো তব আপন করে।" সুতরাং কোন না কোন সময় মানুষ বিবেকের দংশনে কাতর হবেই এবং দীর্ঘদিনের অব্যক্ত যন্ত্রণা বেরিয়ে আসবেই।
Subscribe to:
Posts (Atom)